বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও পরবর্তী সময়ে প্রশাসন ও আওয়ামিলীগ কর্তৃক সৃষ্ট গণহত্যায় জড়িতদের অনতিবিলম্বে গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে ৩ দফা দাবিসহ ৭ দিনের আল্টিমেটাম দিয়ে মানবন্ধন করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) `জুলাই গণহত্যা নিশ্চিত পরিষদ`।
সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) পূর্বঘোষিত কর্মসূচী অনুযায়ি বিকাল ৩ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে একত্রিত হয় জুলাই গণহত্যা নিশ্চিত পরিষদের সদস্যরা এবং ৩ টা ৩০ মিনিটে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন ঢাকা আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে, এসময় তারা `আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে,` আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ,` সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে, ডাইরেক একশন, আওয়ামিলীগ এর বিরুদ্ধে, ডাইরেক একশন`, আমার ভাইয়ের রক্ত,বৃথা যেতে দেবোনা `ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকে। এসময় তারা অবিলম্বে গণহত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে ৩ দফা দাবি আদায়ে ৭ দিনের আল্টিমেটাম ঘোষণা করে জুলাই গণহত্যা বিচার নিশ্চিত পরিষদ, দাবিগুলো হলো –
`অবিলম্বে খুনী-দোসরদের চিহ্নিত করে গঠনমূলক সরকারি মামলা নিশ্চিত করা,`৭ দিনের মধ্যে সারাদেশের খুনী-দোসরদের গ্রেপ্তার নিশ্চিত করা`, ৩ মাসের মধ্যে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে অপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করা`,।
৫ আগস্ট সন্ত্রাসী পুলিশের গুলিতে শহিদ আলিফের বাবা কান্নাবিজড়িত কণ্ঠে বলেন, ` ৫ই আগস্ট জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লংমার্চ টু ঢাকা করার সময় আমার ছেলে আলিফকে সাভার থানা বাস স্ট্যান্ডে সন্ত্রাসী পুলিশবাহিনি নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করে, অথচ এই সন্ত্রাসী প্রশাসনের বিরুদ্ধে সরকার এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা নেয়নি, ছাত্রলীগ-আওয়ামী লীগের যারা গণহত্যায় জড়িত ছিল আমরা দেখতে পাচ্ছি তারা এখনো বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে, যা শহিদদের সাথে তামাশা ছাড়া কিছুই না, আমার ছেলেসহ যারা শহীদ হয়েছে প্রত্যেক খুনের বিচার চাই, বিচারের দাবিতে প্রয়োজনে আমিও শহিদ হয়ে ছেলের কাছে চলে যাবো, তবুও খুনি ও খুনির দোসরদের বিচার নিশ্চিত না করে আমরা মাঠ ছাড়বো না `
শহিদ শ্রাবণ গাজীর বাবা মান্নান গাজী বলেন, `ছাত্রদের ওপর যখন আওয়ামীলীগের গুন্ডা বাহিনী দমন পীড়ন শুরু করলো তখন আমরা বসে থাকতে পারিনি, তারই ধারাবাহিকতায় ৫ আগস্ট আমার ছেলেকে সাভারে আওয়ামিলীগের গুন্ডা ও পুলিশবাহিনি আমার ছেলেকে নির্মমভাবে হত্যা করে, হত্যাকারী ও তার দোসররা এখনো গ্রেপ্তার হয়নি অথচ আমার ছেলে কবরে চলে গেছে, আমি অনতিবিলম্বে তাদের গ্রেপ্তার বিচারের দাবি করছি`।
মানববন্ধন ও ২০ মিনিট ঢাকা আরিচা মহাসড়ক অবরোধের পর শেষ হয় জুলাই গণহত্যা নিশ্চিত পরিষদের কর্মসূচি।
উল্লেখ্য, জুলাই-আগস্ট গণহত্যায় শহিদের সংখ্যা প্রায় ১৫০০ এবং আহত প্রায় ২২ হাজার, যাদের মধ্যে আছে ছাত্র, শিক্ষক, শ্রমজিবী, কৃষকসহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ, মানবেতর জীবনযাপন করছেন আহত ও অঙ্গহানি হওয়া বিপ্লবীরা।